Tuesday, September 11, 2012

জাতীয় কর্ম নির্দেশিকা


বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন
অস্থায়ী সদর দপ্তরঃ ২২২/খ, ফ্ল্যাট # সি-২ (২য় তলা), মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭
ঢাকা-১২১৭, ফোনঃ ৯৩৬১৩৫৩, ০১৭১৪০৯৮৩৫৯
 জাতীয় কর্ম নির্দেশিকা/NATIONAL GUIDELINE
(জাতীয় নির্বাহী কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত- ২৭ অক্টোবর ১৯৯৯)
প্রথম অধ্যায়ঃ
(ক) পরিচিতিঃ
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন আইনের শাসন ও সর্বস্তরে শান্তি প্রতিষ্ঠাসহ মানবাধিকার উন্নয়ন ও সংরক্ষণে নিবেদিত একটি স্বেচ্ছাসেবী, অরাজনৈতিক ও অলাভজনক মানবাধিকার বিষয়ক এবং নির্যাতন বিরোধী বৃহত্তর আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান। জাতিসংঘ মানবাধিকার সনদ (ইরষষ ড়ভ জরমযঃং) এর উপর ভিত্তি করে ১৯৮৭ইং সালে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সরকারের সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর এনজিও ব্যুরোর অধীনে রেজিস্টার্ড প্রাপ্ত হয়। দেশের বৃহত্তর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন, জাতিসংঘ সংস্থা ইউনেস্কো, ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অব জুরিস্টস্, আফ্রিকান কমিশন অন হিউম্যান এন্ড পিপলস্ রাইটস্-এর নিবন্ধন ও স্বীকৃতি সহ বিশ্বের বিভিন্ন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি। অহিংসার প্রতিপাদ্যে বিশ্বাসী কমিশনের সারাদেশে প্রতিটি জেলায় জেলা শাখা, মহানগর, উপজেলা/থানা ও পৌরসভা শাখা মিলে প্রায় পাঁচশতাধিক শাখা প্রতিনিয়ত মানবতার সেবায় আÍনিয়োগ করছে। দেশের বরেণ্য তথা বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ যথাক্রমে শিক্ষাবিদ, আইনবিদ, সাংবাদিক, চিকিৎসক সহ বিশিষ্ট সমাজ সেবীগণ বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সদর দপ্তর ও শাখাগুলোতে সদস্য/সদস্যা হিসেবে অন্তর্ভূক্ত রয়েছেন। এছাড়া কমিশনের প্রতিটি শাখা কমিটিতে উলে¬খযোগ্য সংখ্যক মহিলা প্রতিনিধি এবং সংখ্যালঘু ও উপজাতি প্রতিনিধিরা অন্তর্ভূক্ত রয়েছেন। সারা দেশের প্রতিটি শাখা তথা শাখার সদস্য/সদস্যারা সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাসেবী ভাবে সমাজের অন্যায়, অবিচার ও জুলুমের বিরুদ্ধে তথা আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। কমিশনের প্রতিটি শাখা নিজ নিজ ক্ষেত্রে মানবাধিকার উন্নয়ন ও সংরক্ষণকল্পে অসহায় নারী-পুরুষদের বিনামূল্যে আইনগত সাহায্যের লক্ষ্যে সালীশির মাধ্যমে সমস্যার সমাধান, প্রশাসনের মাধ্যমে মানবাধিকার লংঘন রোধ, বিভিন্ন মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা তদন্ত ও নিরপেক্ষ প্রতিবেদন তৈরী করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ, মানবাধিকার ম্যাগাজিন নিয়মিত প্রকাশ, নির্যাতিতদের পক্ষে আদালতে মামলা দায়ের করে অধিকারহীন নারী-পুরুষের অধিকার আদায়ের ব্যবস্থা করা, মানবাধিকার বিষয়ে সচেনতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে সেমিনার, কর্মশালা ও প্রশিক্ষণের আয়োজন করা, মানবাধিকার বিষয়ক বিভিন্ন পুস্তিকা লিফল্যাট ও পোস্টার প্রকাশনা, সকল নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করা, আত্মনির্ভরশীল প্রকল্প চালু করা এবং দুর্যোগকালীন সময়ে দূর্গতদের পাশে এগিয়ে আসা সহ বহুমুখী কর্মসূচী অব্যাহত ভাবে পালন করছে। কমিশনের সদর দপ্তর ও শাখা কমিটিগুলো গড়ে প্রতি বছর ৪০ হাজারের বেশি অসহায় নারী-পুরুষকে বিনামূল্যে আইনগত পরামর্শ ও সহায়তা দিয়ে আসছে।

দ্বিতীয় অধ্যায়ঃ-
(খ) কার্যক্রমঃ
(১) জাতীয় নির্বাহী কমিটি,(২) শাখা কার্যক্রম, (৩) এ্যাফিলিয়েশন/অধীভূক্ত সংগঠন।
(১) জাতীয় নির্বাহী কমিটিঃ বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের জাতীয় নির্বাহী কমিটি কমিশনের গঠনতন্ত্র/ জাতীয় কর্ম নির্দেশিকা অনুযায়ী সদর দপ্তরের সকল কার্যক্রম পরিচালনা করবে এবং দেশের সকল শাখা কমিটিগুলোর কর্মকান্ড তদারকি করবে। জাতীয় পর্যায়ে এই কমিটি মানবাধিকার লংঘনজনিত একক, গোষ্ঠীগত, জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক যে কোন বিষয়ের অভিযোগ সমূহ গ্রহণ করতে পারবে। জাতীয় নির্বাহী কমিটি যে কোন ধরনের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তদন্ত পরিচালনা করতে পারবে। সালিশীর মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারবে, আর্জেন্ট এ্যাকশন তথা প্রশাসনের মাধ্যমে মানবাধিকার লংঘনের বিরুদ্ধে চাপ প্রয়োগের ব্যবস্থা সহ আদালতের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে। কমিশনের সদর দপ্তরের নিজস্ব প্রকাশনা মানবাধিকার ম্যাগাজিন নিয়মিত প্রকাশের ব্যবস্থা, বিভিন্ন মানবাধিকার লংঘনজনিত ঘটনা ও আইনের উপর গবেষণামূলক প্রতিবেদন তৈরী বই-পুস্তক ও পোস্টার, লিফল্যাট ছাপা, আত্মনির্ভরশীল প্রকল্প চালু, গণ সচেতনতামূলক বিভিন্ন কর্মশালা ও প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা এবং মৌলিক অধিকার রক্ষার্থে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর হাইকোর্ট ও সুপ্রীম কোর্টে মামলা ও রিট পিটিশনের মাধ্যমে  মানবাধিকার সংরক্ষণ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে। ১০ই ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস জাতীয়ভাবে তথা সকল শাখাগুলো যাতে করে যথাযথভাবে পালন করে তার উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
(২) শাখা কার্যক্রমঃ জাতীয় নির্বাহী কমিটির পক্ষে কমিশনের শাখা কমিটিগুলোই কমিশনের স্থানীয় প্রতিনিধি হিসেবে মানবাধিকার উন্নয়ন ও সংরক্ষনের দায়িত্ব পালন করবে। নিজ নিজ ভৌগলিক সীমানায় শাখা কমিটিগুলো সকল প্রকার নির্যাতন প্রতিরোধ তথা নারী নির্যাতন প্রতিরোধ, নারী ও শিশু পাচার প্রতিরোধ, সালিশীর মাধ্যমেপারিবারিক সমস্যার সমাধান, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা প্রতিষ্ঠান সমূহের কর্মী কর্তৃক বেআইনী নির্যাতনের প্রতিরোধ ও কারাগারে বন্ধী নির্যাতনের প্রতিরোধ, বেআইনী ফতোয়াবাজী বন্ধ করা, চাকরী সংক্রান্ত নির্যাতন বন্ধ তথা শ্রমজীবিদের অধিকার প্রতিষ্ঠা, সংখ্যালঘু ও উপজাতিদের অধিকার সংরক্ষণ, দুর্যোগকালীন সময়ে দুর্গতদের সহায়তা সহ মানবাধিকার লংঘন জনিত যে কোন বিষয়ের উপর বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের শাখাগুলো স্বেচ্ছায় কাজ করবে। নিজ নিজ ভৌগলিক এলাকার বাহিরে মানবাধিকার লংঘনের বিষয় কোন শাখার নজরে আসলে সংশি¬ষ্ট জেলা শাখাকে সরাসরি অবহিত করানো ছাড়াও  কমিশনের সদর দপ্তরকে অবহিত করতে শাখাগুলো সচেষ্ট থাকবে। জেলা শাখা কমিশনের সদর দপ্তর ও তার অধীভুক্ত শাখাগুলোর সহায়তায় সকল প্রকার নির্বাচন পর্যবেক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করবে। যে কোন অপরাধজনিত ঘটনাসমূহের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য থানা-পুলিশ ও আদালতসহ সংশ্লিষ্ট সরকারী বিভাগ রয়েছে। কেবলমাত্র আইনের যথাযথ প্রয়োগ না হলে সেক্ষেত্রে  মানবাধিকার লংঘনের শিকার নারী পুরুষের লিখিত আবেদন গ্রহণের পর অথবা যে কোন প্রচার মাধ্যম কর্তৃক অবহিত হয়ে মানবাধিকার কমিশনের শাখাসমূহ এগিয়ে যাবে। শাখাগুলো নিজ নিজ এলাকায় মানবাধিকার উন্নয়ন ও সংরক্ষণের লক্ষ্যে আলোচনা সভা, সেমিনার, কর্মশালা এবং শান্তি মিছিলের আয়োজন ছাড়াও শিক্ষা ও শিল্প প্রতিষ্ঠানে মানবাধিকার বিষয়ক স্মারক আলোচনা সভার আয়োজন করতে পারবে। বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের শাখাসমূহ কোন বিক্ষুব্ধ প্রতিবাদ সভা, বিক্ষুব্ধ মিছিল, হরতাল ও অবরোধের ন্যায় কোন হিংসাত্মক কর্মসূচী গ্রহণ করতে পারবে না। অহিংসার পথই হবে মানবাধিকার কমিশনের শাখাগুলোর প্রতিপাদ্য। জেলা, সিটি কর্পোরেশন এবং সুপ্রীমকোর্ট শাখা কেবল মাত্র মানবাধিকার সংরক্ষণের লক্ষ্যে যে কোন বিষয়ের উপর সরাসরি আদালতে মামলা দায়ের করতে পারবে। অন্যান্য শাখাগুলো জেলা শাখার অনুমোদন গ্রহণ করে নিজ শাখার নামে আদালতে মামলা দায়ের করতে পারবে। আদালতে মামলা দায়েরের পর সকল শাখা মামলার বিষয়বস্তু কমিশনের সদর দপ্তরকে জরুরী অবহিত করতে হবে। শাখাগুলো ইচ্ছা করলে প্রচারণার লক্ষে মানবাধিকার লংঘনজনিত ঘটনার উপর বিজ্ঞপ্তি অথবা সাংবাদিক সম্মেলন করতে পারবে। বিভাগীয় সমন্বয় কমিটিগুলো বিভাগের মানবাধিকার লংঘনজনিত বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করবে এবং সংশি¬ষ্ট জেলাকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানাতে পারবে। কোন শাখা বা তার সদস্য অপর কোন শাখা বা কোন সদস্যের বিরুদ্ধে দেওয়ানী বা ফৌজদারী কোন মামলা দায়ের করতে হলে কমিশনের সদর দপ্তরের লিখিত অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে। জাতীয় নির্বাহী কমিটির মেয়াদকাল থাকবে ৫ বছর। বিভাগীয় সমন্বয় কমিটির মেয়াদকাল থাকবে ২ বছর। জেলা, সিটি কর্পোরেশন, উপজেলা, থানা এবং পৌরসভা শাখার মেয়াদকাল থাকবে ৩ বছর। এছাড়া অন্যান্য সকল ব্রাঞ্চের ক্ষেত্রে মেয়াদকাল থাকবে ৩ বছর।
(৩) এ্যাফিলিয়েশন/অধীভুক্ত সংগঠনঃ বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের জাতীয় গঠনতন্ত্র এবং জাতীয় কর্ম নির্দেশিকার প্রতি আনুগত্য প্রকাশকারী যে কোন সংগঠনকে কমিশনের সদর দপ্তর পর্যালোচনা সাপেক্ষে এ্যাফিলিয়েশন বা অধীভূক্ত সংগঠন হিসেবে অনুমাদন প্রদান করতে পারবে। কমিশনের সদর দপ্তরের কাছে অনুমোদনকৃত সংগঠনগুলো তাদের কার্যক্রম এবং আয় ব্যয়ের হিসাব নিয়মিত পেশ করতে বাধ্য থাকবে। অধীভূক্ত সংগঠন কমিশনের মনোগ্রাম ব্যবহার করতে পারবে। অধীভূক্ত প্রতিষ্ঠান এমন কোন পদ ব্যবহার করবে না, যার সাথে কমিশনের জাতীয় নির্বাহী কমিটির কোন পদের মিলের কারণে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের জাতীয় সদর দপ্তর দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আজীবন সদস্যপদ প্রদান করতে পারবে। আজীবন সদস্যগণ একটি সনদপত্র এবং পরিচয়পত্র পাবেন। প্রতি ২ বছর অন্তর অন্তর পরিচয়পত্র নবায়ন করতে হবে। কমিশনের সদর দপ্তর প্রয়োজনে তাদের এ্যাফিলিয়েশন বা অনুমোদন প্রত্যাহার অথবা বাতিল করার অধিকার সংরক্ষণ করবে।
তৃতীয় অধ্যায়ঃ
(গ) গঠনতন্ত্রঃ
(১) জাতীয় স্থায়ী পরিষদ, (২) জাতীয় উপদেষ্টা পরিষদ, (৩) জাতীয় নির্বাহী কমিটি, (৪) আন্তর্জাতিক শাখা, (৫) বিভাগীয় সমন্বয় কমিটি, (৬) জেলা শাখা, (৭) মহানগর শাখা, (৮) সুপ্রিমকোর্ট শাখা, (৯) আঞ্চলিক শাখা, (১০) উপজেলা/থানা শাখা, (১১) পৌরসভা শাখা, (১২) বিশ্ববিদ্যালয় শাখা, (১৩) সিটি ওয়ার্ড শাখা, (১৪) ইউনিয়ন শাখা, (১৫) কলেজ শাখা, (১৬) শিল্প প্রতিষ্ঠান শাখা. (১৭) সদস্য (১৮) আজীবন সদস্য এবং (১৯) নির্বাচন/মেয়াদ।
(১) জাতীয় স্থায়ী পরিষদঃ বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের ১৭ জন প্রতিষ্ঠাতা সদস্যকে নিয়ে একটি জাতীয় স্থায়ী পরিষদ বা সাধারণ পরিষদ রয়েছে। প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের ব্যক্তিগত অর্থ ও ত্যাগে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন প্রতিষ্ঠা লাভ করে এবং দীর্ঘ সময় কাল প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়ে আসছে। এছাড়া সংগঠনের ভারসাম্য রক্ষার লক্ষ্যে জাতীয় স্থায়ী  পরিষদের গুরুত্ব রয়েছে। প্রতিষ্ঠাতা স্থায়ী পরিষদের সদস্যদের মধ্যে থেকে ৬ জন এবং ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, এবং খুলনা অঞ্চল বা পুরাতন বিভাগ থেকে একজন করে ৪ জন এবং ১ জন জাতীয় পর্যায়ের বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মীসহ মোট ১১ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় নির্বাহী কমিটি জাতীয় স্থায়ী পরিষদের নেতৃত্বে গঠিত হবে। জাতীয় স্থায়ী পরিষদের কোন সদস্য মৃত্যুবরণ করলে অথবা স্বেচ্ছছায় পদত্যাগ করলে অথবা উম্মাদ হলে সে স্থলে ১০ বছরের অভিজ্ঞ যে কোন সিনিয়র শাখা সদস্যকে জাতীয় স্থায়ী পরিষদে অন্তর্ভূক্ত করা হবে। জাতীয় নির্বাহী কমিটির মহাসচিব অথবা জাতীয় স্থায়ী পরিষদের তিন ভাগের দু‘ভাগ সদস্যের স্বাক্ষর যুক্ত পত্রের মাধ্যমে জাতীয় স্থায়ী পরিষদ বা সাধারণ পরিষদের সভা আহ্বান করা যাবে।
(২) জাতীয় উপদেষ্টা পরিষদঃ দেশের বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ যাদের বয়স ৪৫ এর ঊর্ধ্বে এমন শিক্ষাবিদ, গবেষক, আইনবিদ, সাংবাদিক সহ অবসর প্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তাগণ এই পরিষদের অন্তর্ভূক্ত তথা উপদেষ্টা হিসেবে বিবেচিত হবেন। জাতীয় নির্বাহী কমিটি দু‘বছরের জন্য ৭ থেকে ১১ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করবে। জাতীয় নির্বাহী কমিটির পাশাপাশি বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সকল শাখাগুলোও ঊর্ধ্বে ৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি উপদেষ্টা পরিষদ একই নিয়মে গঠন করতে পারবে। কমিশনের সদর দপ্তর এবং শাখা কমিটিগুলো ইচ্ছা করলে তাদের নিজ নিজ উপদেষ্টাদের মধ্য থেকে একজন উপদেষ্টা চেয়ারম্যান করতে পারবেন, তবে তা বাধ্যতামূলক নয়।
(৩) জাতীয় নির্বাহী কমিটিঃ বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের জাতীয় নির্বাহী কমিটি তার মেয়াদকালীন সময় গঠনতন্ত্র/জাতীয় কর্ম নির্দেশিকা মোতাবেক সকল কর্মকান্ড পরিচালনা করবে এবং সকল কিছুর দায়বদ্ধ থাকবে। জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সংখ্যা থাকবে ৭ থেকে ১১ সদস্য বিশিষ্ট। প্রতিষ্ঠাতা সদস্য থেকে ৬ জন এবং বৃহত্তর ৪টি বিভাগ থেকে ৪ জন এবং মনোনীত ১ জন সদস্যসহ মোট সদস্য সংখ্যা হবে ১১ জন। বিভাগীয় সদস্য অন্তর্ভূক্ত হবার পূর্বে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য থেকেই জাতীয় নির্বাহী কমিটি গঠিত হবে। মোট তিন বছর এই কমিটির মেয়াদ কাল থাকবে। একজন সভাপতি, একজন মহাসচিব ছাড়া কমিটির সকলেই সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
জাতীয় নির্বাহী কমিটি সরাসরি উপদেষ্টা পরিষদ, বিভাগীয় সমন্বয় কমিটি, জেলা শাখা, মহানগর শাখা, সুপ্রীমকোর্ট শাখাসমূহ সরাসরি অনুমোদন করবে। উপজেলা/থানা শাখা, পৌরসভা শাখা এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখাসমূহ জেলা শাখার সুপারিশক্রমে কমিশনের সদর দপ্তর অনুমোদন প্রদান করবে। জাতীয় নির্বাহী কমিটি কমিশনের কর্মকান্ডকে গতিশীল করার লক্ষ্যে যে কোন শাখা কমিটিকে অনুমোদন প্রদান অথবা সাময়িক বা চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত, বাতিল অথবা অনুমোদন প্রত্যাহার করতে পারবে। জাতীয় নির্বাহী কমিটির পক্ষে মহাসচিব সিদ্ধান্তসমূহ কার্যকর করবেন।
(৪) আন্তর্জাতিক শাখাঃ বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন বিশ্বের প্রায় সকল দেশেই পর্যায়ক্রমে শাখা গঠন করার উদ্যোগ গ্রহণ করবে। ইতিমধ্যে ইউরোপ ও আমেরিকা মহাদেশের বেশ কিছু দেশে শাখা গঠনের কাজ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশী বংশভূত সংশি¬ষ্ট দেশের নাগরিকদের বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত করতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উদ্বুদ্ধ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। কমিশনের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সরাসরি অধীভূক্ত এ‘সকল কমিটিগুলো একটি পূর্ণ জেলা শাখার মর্যাদা ভোগ করবে এবং জেলা শাখার ছকে গঠিত হবে। আন্তর্জাতিক শাখাগুলোর মাধ্যমে মানবাধিকার কর্মীগণ বিভিন্ন দেশে প্রশিক্ষণ গ্রহণের লক্ষ্যে একে অপরের দেশে ভ্রমণের সুযোগ পাবে। আন্তর্জাতিক শাখার মেয়াদ হবে ৩ (তিন) বছর।
(৫) বিভাগীয় সমন্বয় কমিটিঃ দেশের মোট ৬টি বিভাগ যথাক্রমে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট ও বরিশালে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের ৬টি বিভাগীয় সমন্বয় কমিটি থাকবে। বিভাগের আওতায় প্রতিটি জেলা, মহানগর শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণ এই সমন্বয় কমিটির সদস্য থাকবেন। সুপ্রীমকোর্ট শাখার সভাপতি ও সাধারণ স¤পাদক ঢাকা বিভাগীয় সমন্বয় কমিটির সদস্য থাকবেন। বিভাগীয় সমন্বয় কমিটির সদস্যরা একজন আহ্বায়ক/সমন্বয়কারী নির্বাচিত করবেন। বছরে কমপক্ষে একবার বিভাগীয় সমন্বয় কমিটির আহবানে বিভাগীয় মানবাধিকার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। বিভাগীয় সমন্বয়কারীর সংশ্লিষ্ট জেলায় তার দপ্তর থাকবে। যে কোন মানবাধিকার কর্মকান্ড এবং শাখার বিষয়ে বিভাগীয় সমন্বয় কমিটি প্রেরিত প্রতিবেদন জাতীয় নির্বাহী কমিটি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করবে এবং জেলা কমিটি তা মেনে চলবে। বিভাগীয় সমন্বয় কমিটির মেয়াদ হবে ২ (দুই) বছর।
(৬) জেলা শাখা ঃ দেশে মোট ৬৪টি জেলা রয়েছে। বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের প্রতিটি জেলায় একটি করে জেলা কমিটি বা জেলা শাখা থাকবে। জেলায় কর্মরত শিক্ষাবিদ, আইনজীবী, সাংবাদিক, চিকিৎসক এবং বিশিষ্ট সমাজসেবীদের নিয়ে প্রতিটি জেলা কমিটি গঠিত হবে। জেলা কমিটির সাংগঠনিক ছকঃ সভাপতি ১ জন, সহ-সভাপতি- ৩ জন, সাধারণ স¤পাদক ১ জন, যুগ্ম স¤পাদক - ২জন, কোষাধ্যক্ষ- ১ জন, প্রচার স¤পাদক- ১জন, সাংগঠনিক স¤পাদক- ১ জন, দপ্তর স¤পাদক ১ জন এবং নির্বাহী সদস্য ঊর্ধ্বে ১০ জন। নির্বাহী কমিটিতে কমপক্ষে ৩জন মহিলা এবং এক বা একাধিক সংখ্যালঘু প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সরকারী চাকরি জীবিরা কমিশনের সদস্য হতে পারবেন, তবে সভাপতির ও সাধারণ স¤পদকের পদে যেতে পারবেন না। উপজাতিয় অঞ্চলে অবশ্যই এক বা একাধিক উপজাতি সদস্যদে নির্বাহী কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। ৭ সদস্যের কম এবং ২১ সদস্যের বেশী নির্বাহী কমিটি গঠন করা যাবে না। জেলা শাখা সালীশি কার্যক্রম, লিগ্যাল এইড, আর্জেন্ট এ্যাকশন, সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রদান, সাংবাদিক সম্মেলন আহ্বান, তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা, সেমিনার ও কর্মশালার আয়োজন, স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ, দুর্যোগকালীন দূর্গতদের সাহায্যে কর্মকান্ড পরিচালনা এবং ১০ই ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস যথাযথভাবে পালন করবে। ১০ই ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবসটি জেলা শাখা নিজস্ব উদ্যোগে র‌্যালী, রক্তদান, মানবাধিকার বিষয়ক চিত্রাংকন, আলোচনা সভা ও সেমিনার প্রকাশনাসহ বিবিধ কর্মসূচীর মাধ্যমে দিবসটি পালন করবে এবং জেলার অধীভূক্ত সকল শাখাগুলোকে দিবসটি পালনে উৎসাহিত করবে। জেলায় বসবাসকারী সভ্যগণই জেলা শাখার সদস্য হবেন।  জেলা শাখার মেয়াদ হবে ৩ (তিন) বছর।
(৭) মহানগর শাখাঃ ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা এবং রাজশাহী এই চারটি মহানগরে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের চারটি মহানগর শাখা বা কমিটি থাকবে। জেলা শাখার ন্যায় মহানগর কমিটি একই ছকে গঠিত হবে, মেয়াদকাল সহ সকল প্রকার কার্যক্রম জেলা শাখার অনুরোপ পরিচালিত হবে। দেশের চারটি মহানগর কমিটি এক একটি জেলা শাখার মর্যাদা ভোগ করবে এবং নিজ ভৌগলিক এলাকায় অনুরূপ ক্ষমতার অধিকারী হবেন। মহানগর এলাকায় বসবাসকারী সভ্যগণই মহানগর শাখা কমিটির সদস্য হিসেবে গণ্য হবেন। মহানগর শাখার মেয়াদ হবে ৩ (তিন) বছর।
(৮) সুপ্রীম কোর্ট শাখাঃ দেশের সর্বোচ্চ বিচারালয় বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের একটি শাখা কমিটি থাকবে। সুপ্রীম কোর্ট শাখা কমিটি জেলা কমিটির মর্যাদা ভোগ করবে এবং সরাসরি কমিশনের সদর দপ্তর কর্তৃক পরিচালিত হবে। সুপ্রীম কোর্ট এবং হাইকোর্টের সাথে সংশি¬ষ্ট আইনজীবী ও অন্যান্য কর্মীগণ এই শাখার সদস্য হতে পারবেন। বিভিন্ন জাতীয় পর্যায়ে তদন্ত কার্যক্রমে অংশগ্রহণ এবং সুপ্রীমকোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিভিন্ন মানবাধিকার সংক্রান্ত মামলা এই শাখা পরিচালনা করবে। সুপ্রীম কোর্ট শাখার মেয়াদ হবে ৩ (তিন) বছর।
(৯) আঞ্চলিক শাখাঃ বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের কার্যক্রম পরিচালনার সুবিধার্থে বিশেষ অঞ্চলসমূহে আঞ্চলিক শাখা গঠন করতে পারবে। জেলা/মহানগর শাখার আকারে, নিয়মে এবং মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত ও একই আকারে গঠিত আঞ্চলিক শাখাসমূহ মানবাধিকার কার্যক্রম পরিচালনা করবে। আঞ্চলিক শাখাসমূহের কর্মকান্ড অঞ্চলসমূহ কমিশনের জাতীয় সদর দপ্তর থেকে নির্ধারণ করা হবে। আঞ্চলিক শাখা জেলা এবং মহানগরের ন্যায় সকল কার্যক্রম কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালনা করবেন। আঞ্চলিক শাখার অধীনে কোন শাখা থাকবে না। অঞ্চলের সকল স্থান থেকে সদস্য সংগ্রহ করতে পারবে এবং একটি নির্বাহী কমিটি আঞ্চলিক শাখার কার্যক্রম পরিচালনা করবে। আঞ্চলিক শাখার মেয়াদ হবে ৩ (তিন) বছর।
(১০) উপজেলা/থানা শাখাঃ দেশের প্রতিটি উপজেলা/থানায় বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের একটি করে শাখা কমিটি থাকবে। জেলা কমিটির সাংগঠনিক ছকে উপজেলা/থানা কমিটিগুলো গঠিত ও পরিচালিত হবে। উপজেলা/থানা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণ পদাধীকার বলে জেলা কমিটির সদস্য হবেন। উপজেলা/থানা কমিটির কার্যক্রম জেলা কমিটি মনিটরিং করবে এবং প্রয়োজনে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। উপজেলা/থানার অধীভুক্ত পৌরসভা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শাখাগুলো উপজেলা/থানা শাখা নিয়ন্ত্রণ করবে। মহানগরের অধীভুক্ত থানাগুলো মহানগর শাখার নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হবে। উপজেলা/থানা এলাকায় বসবাসকারী সভ্যগণই উপজেলা/থানা শাখার সদস্য হতে পারবেন। উপজেলা শাখার মেয়াদ হবে ৩ (তিন) বছর।
(১১) পৌরসভা শাখাঃ দেশের প্রতিটি পৌর এলাকায় একটি করে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের পৌরসভা শাখা বা কমিটি থাকবে। জেলা কমিটির সাংগঠনিক ছকে পৌরসভা শাখাগুলো গঠিত হবে এবং একই নিয়মে পরিচালিত হবে। পৌর এলাকায় বসবাসকারী সভ্যগণই পৌরসভা শাখার সদস্য হতে পারবে। উপজেলা/থানা শাখা পৌরসভা শাখার কার্যক্রম তদারকি করবেন। বৃহত্তর পৌরসভা শাখাগুলো যেখানে একাধিক থানা অন্তর্ভূক্ত সেস্থলে জেলা কমিটি সে সকল পৌরসভাগুলো কার্যক্রম সরাসরি তদারকি করবে। পৌর শাখাগুলো একই নিয়মে পৌর ওয়ার্ড শাখা গঠন করতে পারবে এবং ইউনিয়ন শাখার মর্যাদা ভোগ করবে। পৌরসভা শাখার মেয়াদ হবে ৩ (তিন) বছর।
(১২) বিশ্ববিদ্যালয় শাখাঃ দেশের সবকটি বিশ্ব বিদ্যালয়ে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের একটি করে শাখা কমিটি থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র/ছাত্রী এবং কর্মচারীগণ কমিটির সদস্য হতে পারবেন। জেলা কমিটির ছক অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় শাখাগুলো গঠন ও পরিচালিত হবে। সংশি¬ষ্ট জেলা কমিটি বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি গঠন ও নিয়ন্ত্রণ করবে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখার মেয়াদ হবে ৩ (তিন) বছর।
(১৩) সিটি ওয়ার্ড শাখাঃ দেশের চারটি সিটি কর্পোরেশন বা মহানগর যথাক্রমে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহী সিটির অধীনে প্রতিটি ওয়ার্ডে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের একটি করে ওয়ার্ড কমিটি থাকবে। জেলা কমিটির সাংগঠনিক ছক অনুযায়ী সিটি ওয়ার্ড কমিটিগুলো গঠিত হবে এবং মহানগর/সিটি কর্পোরেশন শাখা ওয়ার্ড কমিটিগুলো কার্যক্রম তদরকি করবে। সিটি ওয়ার্ডগুলো ইউনিয়ন শাখার মর্যাদা ভোগ করবে। ওয়ার্ড এলাকায় বসবাসরত সভ্যগণ ওয়ার্ড কমিটির সদস্য হবেন। সিটি ওয়ার্ড শাখার মেয়াদ হবে ২ (দুই) বছর।
(১৪) ইউনিয়ন শাখাঃ দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের শাখা কমিটি থাকবে। জেলা কমিটির সাংগঠনিক ছক অনুযায়ী ইউনিয়ন শাখাগুলো গঠন ও পরিচালিত হবে। উপজেলা/থানা শাখাগুলো ইউপি শাখাগুলো গঠন ও তদারকি করবে। ইউনিয়নে বসবাসকারী সভ্যগণ ইউনিয়ন শাখার সদস্য হতে পারবেন।  ইউনিয়ন শাখার মেয়াদ হবে ২ (দুই) বছর।
(১৫) কলেজ শাখাঃ দেশের প্রতিটি কলেজে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের একটি করে কলেজ শাখা কমিটি গঠন করা যাবে। কলেজের শিক্ষক ও ছাত্র/ছাত্রীগণ এই শাখার সদস্য হবেন। জেলা কমিটির ছক অনুযায়ী প্রতিটি কলেজ শাখা গঠিত ও পরিচালিত হবে। জেলার পক্ষে উপজেলা/থানা কমিটিগুলো কলেজ শাখাগুলো গঠন ও কার্যক্রম তদারকি করবে এবং ইউনিয়ন শাখার মর্যাদা ভোগ করবে।  কলেজ শাখার মেয়াদ হবে ২ (দুই) বছর।
(১৬) শিল্প প্রতিষ্ঠান শাখাঃ প্রতিটি শিল্প অঞ্চলে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের একটি করে আঞ্চলিক এবং প্রতিষ্ঠান শিল্প ইউনিট শাখা কমিটি গঠন করা যাবে। জেলা শাখার ছক অনুযায়ী শিল্প প্রতিষ্ঠান শাখাগুলো গঠন ও পরিচালিত হবে। জেলা শাখাগুলো সরাসরি শিল্প প্রতিষ্ঠান শাখা ও শিল্প আঞ্চলিক শাখা গঠন ও কার্যক্রম তদারকি করবে। স্থানীয় শিল্প-প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিক ও কর্মচারীগণ এ সকল কমিটিগুলোতে অন্তর্ভূক্ত হতে পারবে এবং ইউনিয়ন শাখার মর্যাদা ভোগ করবে। শিল্প প্রতিষ্ঠান শাখার মেয়াদ হবে ২ (দুই) বছর।
(১৭) সদস্যঃ বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের গঠনতন্ত্র/জাতীয় কর্ম নির্দেশিকার প্রতি আনুগত্য এবং কর্মকান্ডের সাথে অন্তর্ভূক্ত হওয়ার ইচ্ছাপোষণকারী এবং যার বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে এমন নারী-পুরুষকে কমিশনের নির্ধারিত সদস্য ফরম/এ-ফরম পূরণ করে শাখার অধীভূক্ত সদস্য পদ লাভ করতে পারবেন। সদস্যদের বেলায় দেশীয় সদস্যদের ভর্তি ফি হিসেবে নগদ ১০০ টাকা এবং বার্ষিক ৬০০ টাকা, মহানগর, জেলা ও সুপ্রীম কোর্ট শাখার বার্ষিক রেজিস্ট্রেশন ফি ১,০০০ টাকা, উপজেলা, থানা ও পৌরসভা শাখার বার্ষিক রেজিস্ট্রেশন ফি ৬০০ টাকা এবং অন্যান্য শাখার রেজিস্ট্রেশন বার্ষিক রেজিস্ট্রেশন ফি ৫০০ টাকা নিয়মিত সদস্য চাঁদা পরিশোধ করতে হবে। কমিশনে অভিযোগ দাখিলকারীকে ১০০ টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি প্রদানপূর্বক অভিযোগ দাখিল করতে হবে। বিদেশী শাখার সদস্যদের বেলায় ভর্তি ফি নগদ মার্কিন ৫ ডলার সমপরিমান অর্থ এবং বাৎসরিক চাঁদা ৫০ মার্কিন ডলার সমপরিমাণে অর্থ পরিশোধ করতে হবে। এছাড়া বিদেশী ব্রাঞ্চগুলোকে বার্ষিক ২৫ মার্কিন ডলার রেজিস্ট্রেশন ফি পরিশোধ করতে হবে। শাখাগুলো অভিযোগকারীর নিকট থেকে ৫ ডলার রেজিস্ট্রেশন ফি গ্রহণপূর্বক অভিযোগপত্র গ্রহণ করতে পারবেন। সংশি¬ষ্ট শাখাগুলো সদস্যদের ভর্তি ফি ও মাসিক চাঁদার অর্থ গ্রহণ করবে।

(১৮) আজীবন সদস্যঃ বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনে আজীবন পদ থাকবে। দেশে বিশিষ্ট সমাজসেবী এবং জ্ঞানগর্ব ব্যক্তিবর্গ বাংলাদেশের আজীবন সদস্য হতে পারবেন। ‘এ’ ‘বি’ এবং ‘সি’ গ্রেডের তিন ধরনের মর্যাদা সম্পন্ন আজীবন সদস্য থাকবে। কমিশনের জাতীয় সদর দপ্তর সরাসরি এবং শাখার সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক সুপারিশকৃত আজীবন সদস্যের অর্ধেক অনুদান শাখা পাবে এবং বাকি অর্ধেক জাতীয় সদর দপ্তর পাবে। আজীবন সদস্যগণ একটি সনদপত্র, পরিচয়পত্র এবং বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের একটি পিন পাবেন। বাংলাদেশের মানবাধিকার কমিশনের মহাসচিব আজীবন সদস্য সনদপত্রে স্বাক্ষর করবেন।  
(১৯) নির্বাচন ও মেয়াদঃ বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের জাতীয় নির্বাহী কমিটি গঠনের লক্ষ্যে জাতীয় স্থায়ী পরিষদ নিজ সদস্য মন্ডলী থেকে ৬ জন সদস্যকে নির্বাচিত/মনোনীত করবে। বৃহত্তর বিভাগীয় সমন্বয় কমিটিগুলো নিজ নিজ বিভাগ থেকে ১ জন করে সর্বসম্মতিক্রমে ৪ জন সদস্য নির্বাচিত/ মনোনীত করবে। পরবর্তীতে মহাসচিব আরও ১ জন সদস্যকে মনোনয়ন প্রদান করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় নির্বাহী কমিটি পূর্ণতা করবে। কমিশনের সদর দপ্তর এবং শাখাগুলো প্রয়োজনে নির্বাচন করার লক্ষ্যে একটি দু‘সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন গঠন করতে পারবে। তাদের মধ্যে ১ জন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং ১জন নির্বাচন কমিশনার হিসেবে বিবেচিত হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশন ৩০ দিনের মধ্যে নির্বাচন স¤পন্ন করবে। জাতীয় নির্বাহী কমিটির মেয়াদ ৫ (পাঁচ) বছর থাকবে। সকল উপদেষ্টা পরিষদের মেয়াদ এক থেকে দু‘বছরের হবে। আন্তর্জাতিক, মহানগর, জেলা, আঞ্চলিক, সুপ্রীম কোর্ট, বিশ্ববিদ্যালয়, উপজেলা, পৌরসভা শাখার মেয়াদকাল হবে ৩ (তিন) বছর এবং অন্যান্য শাখার মেয়াদ হবে ২ (দুই) বছর।
৪র্থ অধ্যায়ঃ
(ঘ) সম্মেলনঃ
(ক) জাতীয় মহাসম্মেলন, (খ) সম্মেলন।
(ক) জাতীয় মহাসম্মেলনঃ বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের জাতীয় নির্বাহী কমিটির উদ্যোগে প্রতি দু‘বছর একটি জাতীয় মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় স্থায়ী পরিষদ, জাতীয় উপদেষ্টা পরিষদ বিভাগীয় সমন¦য় কমিটি এবং জেলা, মহানগর, সুপ্রিমকোর্ট, উপজেলা/থানা ও পৌরসভা শাখার সভাপতি ও সাধারণ স¤পাদকগণ জাতীয় মহাসম্মেলনের প্রতিনিধি হিসেবে অন্তর্ভূক্ত থাকবেন। জাতীয় মহাসম্মেলনের যে কোন সর্ব সম্মত সিদ্ধান্ত জাতীয় নির্বাহী কমিটি মানতে বাধ্য থাকবে।
(খ) সম্মেলনঃ বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের কার্যক্রম গতিশীল করার লক্ষ্যে সম্মেলন করার বিষয়টির উপর বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। বিভাগীয় সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে প্রতিটি বিভাগে বছরে একবার বিভাগীয় সম্মেলন এবং সকল শাখাসমূহ অনুরূপভাবে বছরে কমপক্ষে একবার স্থানীয়ভাবে শাখা সম্মেলনের আয়োজন করবে। সম্মেলনগুলোতে শাখার উপদেষ্টা পরিষদ, নির্বাহী কমিটি এবং সাধারণ সদস্যগণ অবশ্যই যাতে করে উপস্থিত থাকে তার কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

পঞ্চম অধ্যায়ঃ
(ঙ) ক্ষমতাঃ
(১) জাতীয় স্থায়ী পরিষদ, (২) জাতীয় নির্বাহী কমিটি, (৩) সভাপতি, (৪) মহাসচিব, (৫) শাখা কমিটির ক্ষমতা, (৬) শাখা সভাপতি ও (৭) শাখা সাধারণ স¤পাদক।
(১) জাতীয় স্থায়ী পরিষদঃ বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের জাতীয় স্থায়ী পরিষদ, সাধারণ পরিষদ, কমিশনের সর্বোচ্চ পরিষদ বলে বিবেচিত হবে। উপদেষ্টা পরিষদ এবং জাতীয় নির্বাহী কমিটিসহ যে কোন শাখা কমিটিকে তার মেয়াদ পূরণের আগে অথবা যে কোন সময় এই পরিষদের তিন ভাগের দুই ভাগ সদস্য একত্রিত হয়ে কমিটি বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করবে। স্থায়ী পরিষদ জাতীয় নির্বাহী কমিটি ভেঙ্গে ৩ মাসের জন্য একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করতে পারবে।
(২) জাতীয় নির্বাহী কমিটিঃ জাতীয় নির্বাহী কমিটি তার মেয়াদকালে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সদর দপ্তরের সকল কর্মকান্ড পরিচালনা করবে এবং সকল শাখা কমিটিগুলোর কর্মকান্ড তদারকী ও মনিটরিং করবে। কোন শাখা বা শাখার সদস্য কমিশনের কর্মকান্ডের স্বার্থ পরিপন্থি কাজ করলে জাতীয় নির্বাহী কমিটি নিজ উদ্যোগে বিষয়টি তদন্ত করতে পারবে অথবা যে কোন শাখার মাধ্যমে তদন্ত স¤পূর্ণ করে শাখা কমিটি বা সদস্যের সদস্য পদ প্রত্যাহার বা বাতিল করার ক্ষমতা রাখবে। জাতীয় নির্বাহী কমিটি নিজ উদ্যোগে শাখা গঠন পূর্বক অনুমোদন প্রদান ও অনুমোদন বাতিল বা প্রত্যাহার কারার অধিকার সংরক্ষণ করবে। এছাড়া কমিশনের অর্থ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে দাতা সংস্থা সহ অর্থ গ্রহণের লক্ষ্যে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে। কমিশন কোন জটিল সমস্যার সম্মুখীন হলে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের মাধ্যমে জাতীয় নির্বাহী কমিটি তার সমাধান করবে।
(৩) সভাপতিঃ বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে গণ্য হবেন। তিনি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করবেন এবং মহাসচিব কর্তৃক জাতীয় নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত বান্তবায়নের কার্যক্রম তদারকী করবেন। সভাপতি জাতীয় নির্বাহী কমিটি সভা আহ্বানের জন্য মহাসচিবকে অনুরোধ জানাবে। সভাপতি দেশের বাইরে গেলে তার স্থলে জাতীয় নির্বাহী কমিটির একজন সিনিয়র সদস্য সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন।
(৪) মহাসচিবঃ বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের জাতীয় নির্বাহী কমিটির মহাসচিব প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী হিসেবে গণ্য হবেন। মহাসচিব জাতীয় স্থায়ী পরিষদ, জাতীয় মহাসম্মেলন এবং জাতীয় নির্বাহী কমিটির কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। জাতীয় নির্বাহী কমিটির পক্ষে মহাসচিব জেলা শাখার মাধ্যমে অথবা সরাসরি শাখা গঠন, অনুমোদন, বিশেষ পদোন্নতি, কমিটি বাতিল, কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত এবং অনুমোদন প্রত্যাহারের ক্ষমতা সংরক্ষণ করবেন। তহবিল সংগ্রহের লক্ষ্যে দাতা সংস্থার সাথে যোগাযোগসহ প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ সংরক্ষনে বিভিন্ন কার্যক্রম চালু করতে পারবেন। মহাসচিব যে কোন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়ের উপর তদন্ত কমিটি গঠন ও প্রতিবেদন প্রকাশ সহ কার্যকর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে। মহাসচিব কমিশনের সদর দপ্তর ও শাখা সমূহের বেতনভোগী সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ, অব্যাহতি এবং বরখাস্তের ক্ষমতা সংরক্ষণ করবে। মহাসচিব কমিশনের কর্মকান্ডকে গতিশীল করার লক্ষ্যে জেলা শাখার সভাপতির মর্যাদায় সারাদেশে ঊর্ধ্বে ২০ জন বিশেষ প্রতিনিধি সর্বোচ্চ দু‘বছর মেয়াদে নিয়োগ/মনোনয়ন প্রদান করতে পারবে। জাতীয় নির্বাহী কমিটির কোন সদস্যের আচরণ প্রতিষ্ঠান পরিপন্থি প্রমাণিত হলে মহাসচিব সাময়িকভাবে তার সদস্যপদ স্থগিত করতে পারবেন। এছাড়া অস্থায়ীভাবে এক বছরের জন্য বিভাগীয় সমন্বয়কারী হিসেবে একজন দায়িত্বশীল মানবাধিকার কর্মীকে নিয়োগ/মনোনয়ন দিতে পারবেন। মহাসচিব দেশের বাইরে থাকাকালে তিনি জাতীয় নির্বাহী কমিটির যে কোন সদস্যকে সে সময়কার জন্য ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব প্রদান করতে পারবেন। মহাসচিব কমিশনের নির্বাহী পরিচালক/পরিচালকের মাধ্যমে তার পক্ষে কর্মকান্ড পরিচালনা করার অনুমতি প্রদান করতে পারবেন।
(৫) শাখা কমিটির ক্ষমতাঃ জেলা, মহানগর, সুপ্রীমকোর্ট, উপজেলা/থানা, পৌরসভা, বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, ইউনিয়ন, শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং সিটি ওয়ার্ড শাখাগুলোর সদস্য নিয়োগ ও বাতিলের ক্ষেত্রে নিজ নিজ শাখার দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে। জেলার অধিনস্থ উপজেলা/থানা, বিশ্ববিদ্যালয়, পৌরসভা শাখা গঠনপূর্বক অনুমোদনের সুপারিশ এবং অনুমোদন প্রত্যাহারের জন্য জেলা সভাপতি ও সাধারণ স¤পাদক যৌথ স্বাক্ষর বা জেলা কমিটির রেজুলেশন সদর দপ্তরে পাঠালে সদর দপ্তর তা কার্যকর করবে। অন্যান্য শাখা যথাক্রমে ইউনিয়ন, কলেজ, শিল্প-আঞ্চলিক ও শিল্প প্রতিষ্ঠান শাখা সমূহকে জেলা শাখা সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন প্রদানসহ প্রত্যাহার বা বাতিল করতে পারবে। শাখা কমিটির সভাপতি এবং সাধারণ স¤পাদক তিনিই হবেন, যারা কমিশনের নিজস্ব অফিস হবার পূর্ব পর্যন্ত তাদের নিজ চেম্বার বা বাস-ভবনের সামনে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের শাখার সাইনবোর্ড লাগিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন। শাখাসমূহ নিজ উদ্যোগে যে কোন মানবাধিকার লংঘন প্রতিরোধে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে।
(৬) শাখা সভাপতিঃ বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সকল শাখার সভাপতি নিজ নিজ শাখার প্রধান হিসেবে বিবেচিত হবেন এবং শাখা নির্বাহী কমিটির সকল সভায় সভাপতিত্ব করবেন। শাখা নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তায়নের লক্ষ্যে কার্যক্রম গতিশীলকরণ, সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধিকরণ, শাখার অধীভূক্ত এলাকায় যেখানে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের কার্যক্রম নেই, সেস্থলে কার্যক্রম চালুকরণ এবং নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্তসমূহ সাধারন স¤পাদক যথাযথ পালন করছে কি না তা পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব শাখা সভাপতির। সভাপতির অনুপস্থিতিতে শাখার সিনিয়ন সহ-সভাপতি সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন।
(৭) শাখা সাধারণ স¤পাদকঃ বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সকল শাখার সাধারণ স¤পাদক শাখার প্রধান নির্বাহী হিসেবে গণ্য হবেন। শাখা নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্তসমূহ সাধারণ স¤পাদক বাস্তবায়ন করবেন। যে কোন অভিযোগ গ্রহণ, বাতিল অথবা প্রয়োজনে তদন্ত পরিচালনা করার অধিকার সাধারণ স¤পাদক সংরক্ষণ করবে। শাখার যে কোন কার্যক্রম বিষয়ে সাধারণ স¤পাদক সভাপতির পরামর্শ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করবে। সাধারণ স¤পাদক শাখা নির্বাহী কমিটির কাছে সরাসরি দায়ি থাকবে। জেলা শাখা, মহানগর শাখা, আন্তর্জাতিক শাখা এবং সুপ্রীমকোর্ট শাখার সাধারণ স¤পাদক গণ তাদের অধীনস্থ শাখাসমূহ গঠনপূর্বক সুপারিশ সহকারে কমিশনের সদর দপ্তরে অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করবে। অন্যান্য শাখাগুলো কমিটির পক্ষে সাধারণ স¤পাদক নিজ উদ্যোগে গঠন ও বাতিলের ক্ষমতা সংরক্ষণ করবে। সাধারণ স¤পাদকের অনুপস্থিতিতে যুগ্ম স¤পাদক গণের মধ্য থেকে যে কোন একজন সাধারণ স¤পাদকের দায়িত্ব পালন করবেন। সাধারণ স¤পাদক শাখার অন্যান্য কর্মকর্তাদের দায়িত্ব বন্টন ও কর্মকান্ড তত্ত্বাবধায়ন এবং কর্মচারী নিয়োগ বা নিয়োগ বাতিল করার অধিকার সংরক্ষণ করবেন।

ষষ্ঠ অধ্যায়ঃ
(চ) আয় ব্যয়ঃ
(১) হিসাব পরিচালনা, (২) তহবিল সংগ্রহ, (৩) নিরীক্ষা
(১) হিসাব পরিচালনাঃ বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সদর দপ্তর ও শাখা কমিটিগুলোর প্রতিটিতে কমপক্ষে একটি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকে সঞ্চয়ী/চলতি হিসাব থাকবে। সদর দপ্তরের হিসাব জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি ও মহাসচিব কর্তৃক যৌথ স্বাক্ষরে পরিচালিত হবে। শাখাগুলোর ক্ষেত্রে সভাপতি, সাধারণ স¤পাদক এবং কোষাধ্যক্ষ্যের যৌথ স্বাক্ষরে হিসাব খুলতে হবে এবং উল্লেখিত তিনজনের যে কোন দু‘জনের স্বাক্ষরে হিসাব পরিচালিত হবে।
(২) তহবিল সংগ্রহঃ বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সদর দপ্তর কর্তৃক যে কোন আন্তর্জাতিক দাতাসংস্থার নিকট থেকে সরকারি বিধি মোতাবেক তহবিল সংগ্রহ করতে পারবে। এছাড়া কমিশনের সদর দপ্তর প্রতিটি জেলা, মহানগর ও সুপ্রিমকোর্ট শাখার নিকট থেকে বার্ষিক রেজিস্ট্রেশন ফি, অন্যান্য শাখার বার্ষিক রেজিস্ট্রেশন ফি। এছাড়া মানবাধিকার ম্যাগাজিনের বিক্রিত অর্থের আংশিক, কমিশনের সদর দপ্তর ও সকল শাখার নিকট সাহায্য প্রার্থী স্বচ্চল আবেদনকারীদের নিকট থেকে রেজিস্ট্রেশন ফি, সদস্যদের ভর্তি ফি এবং বার্ষিক সদস্য চাঁদা হিসেবে গ্রহণ করে তহবিল সংগ্রহ করবে। আন্তর্জাতিক শাখাগুলোর ক্ষেত্রে শাখা রেজিস্ট্রেশন ফি সদর দপ্তর বরাবর পরিশোধ করতে হবে। কমিশনের সদর দপ্তর এবং শাখাগুলো স্থানীয় দাতাদের নিকট থেকে অর্থ সংগ্রহ করে শাখাগুলোর তহবিল সৃষ্টি করতে পারবে। এছাড়া জেলা, মহানগর, সুপ্রীমকোর্ট এবং আন্তর্জাতিক শাখাগুলো মহাসচিবের অনুমোদন সাপেক্ষে সরাসরি দাতা সংস্থার নিকট থেকে প্রকল্পের বিপরীতে বিধি মোতাবেক তহবিল গ্রহণ করতে পারবে। কমিশনের সদর দপ্তর এবং শাখা সমূহ স্থানীয়ভাবে সরকারী ও বেসরকারী প্রাতিষ্ঠানিক অনুদান এবং ব্যক্তিগত অনুদান গ্রহণ করে তহিবল সৃষ্টি করতে পারবে।
(৩) নিরীক্ষাঃ বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সদর দপ্তর এবং সকল শাখাসমূহ তাদের কার্যক্রমের বিপরীতে খরচকৃত অর্থের যথাযথ হিসাব রাখা বাধ্যতামূলক হবে। সদর দপ্তর এবং শাখা সমূহের আয়-ব্যয়ের হিসাব কমপক্ষে দু‘বছরে একবার একটি রেজিস্টার্ড অডিট ফার্মের মাধ্যমে অডিট/নিরীক্ষা করাতে হবে। অডিট/নিরীক্ষা প্রতিবেদন জাতীয় নির্বাহী কমিটি জাতীয় মহাসম্মেলনে উপস্থাপন করবে এবং শাখা কোষাধ্যক্ষগণ শাখা সম্মেলনে বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে।

সপ্তম অধ্যায়ঃ
(ছ) বিবিধঃ
(১) প্রচারণা, (২) সাইনবোর্ড ব্যবহার, (৩) রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণ, (৪) পতাকা, (৫) পরিচয় পত্র।
(১) প্রচারণাঃ বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের কর্মকান্ডকে গতিশীল ও কার্যক্রমকে প্রসার করতে হলে তার যথাযথ প্রচারণা আবশ্যক। প্রচারণায় মানবাধিকার কর্মীদের কর্মকান্ডকে গতিশীল করবে। কমিশনের সদর দপ্তরের কর্মকান্ড প্রচারের পাশাপাশি শাখার তদন্ত প্রতিবেদন, শাখার মাসিক প্রতিবেদন এবং শাখা এলাকার বিশেষ ঘটনার বিষয়গুলো তদন্তপূর্বক স্থানীয় ও জাতীয় সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ও সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে শাখাগুলো নিজ নিজ কর্মকান্ডের প্রচারনা চালাতে পারবে। কমিশনের কার্যক্রম প্রচারের লক্ষ্যে সদর দপ্তরের পাশাপাশি শাখাগুলো জার্নাল বা স্মরনিকা প্রকাশ, পোস্টার ও কেলেন্ডার প্রকাশ এবং মানবাধিকার কর্মকান্ডে অবদান রাখার জন্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে পদক প্রদান করে প্রচারণা বৃদ্ধি করতে পারবে।
(২) সাইনবোর্ড ব্যবহারঃ বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সদর দপ্তর সহ প্রতিটি শাখা তার দপ্তরের সামনে অবশ্যই সাইনবোর্ড লাগাতে বাধ্য থাকবে। এছাড়া প্রধান সড়কের পাশে তীর মার্ক দিয়ে একাধিক সাইনবোর্ড লাগানো ছাড়াও বিমানবন্দর, রেল স্টেশন, বাস টার্মিনাল, লঞ্চ ঘাট, আদালত প্রাঙ্গন সহ বিশেষ জনচলাচল এলাকায় মানবাধিকার সংক্রান্ত বাণী সহ সাইন বোর্ড কমিশনের সদর দপ্তর ও শাখাগুলো লাগাতে পারবে। বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সাইনবোর্ড গুলো নীল রং এর মধ্যে সাদা লেখা হবে। এছাড়া প্রতিটি সাইনবোর্ডে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সাদা রঙের মনোগ্রাম থাকবে। সাইনবোর্ডগুলোর মাপ নি¤œতম দুই ফুট ঢ দেড় ফুট হতে হবে।
(৩) রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণঃ বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন রাষ্ট্রের উন্নয়ন এবং রাষ্ট্র কর্তৃক মানবাধিকার উন্নয়ন ক্ষেত্রে একটি সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন প্রথম রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে একটি মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করে, যা বর্তমানে বাস্তায়নের পথে রয়েছে। এছাড়া প্রতিটি জেলায় ও উপজেলা/থানা পর্যায়ের বিভিন্ন কমিটিগুলোতে বেসরকারী মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান হিসেবে সদস্য লাভ গ্রহণ করে ইতিমধ্যে রাষ্ট্রীয় কর্মকান্ডের সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে। জেলা পর্যায়ে জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটি, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি, পরিবেশ উন্নয়ন কমিটি এবং জেলা আইন সহায়তা কমিটির সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধিগণ ইতিমধ্যে বহু জেলায় তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে এবং রাখছে। এছাড়া জেলা কারগারগুলোতে মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে কারাপরিদর্শক হিসেবে মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধিগণ বেশ কিছু জেলায় বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। থানা ও পৌর এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা কমিটিগুলোতে অনুরূপভাবে কমিশনের প্রতিনিধিগণ অন্তর্ভূক্ত হয়ে রাষ্ট্রীয় কর্মকান্ডে সহযোগিতা করছে।
(৪) পতাকাঃ বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের একটি পতাকা থাকবে। কমিশনের জাতীয় কার্যালয় বা সদর দপ্তর সহ সকল শাখাগুলো তাদের দপ্তরের সামনে এই পতাকা ব্যবহার করতে বা উড়াতে পারবে। কমিশনের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি, মহাসচিব এবং উপদেষ্টাগণ দেশের অভ্যন্তরে কমিশনের দায়িত্ব পালনকালে নিজ নিজ পরিবহনে পতাকা ব্যবহার করতে পারবেন। অন্যান্য সকল শাখার সভাপতি ও সাধারণ স¤পাদকগণ নিজ নিজ এলাকার ভিতরে চলাচলের সময় পরিবহনে কমিশনের পতাকা ব্যবহার করতে পারবেন। পতাকার সাইজ বা মাপ বাংলাদেশের পতাকা ব্যবহারের অনুকরণে তৈরী করতে হবে। নীল রংয়ের কাপড়ের মধ্যে ইঐজঈ যুক্ত সাদা রঙের মনোগ্রাম থাকবে।
(৫) পরিচয়পত্রঃ বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সকল সদস্য/সদস্যাসহ সকল শাখা সদস্য/সদস্যাদের পরিচয় পত্র থাকবে। জাতীয় সদর দপ্তরের সকল কর্মকর্তা/কর্মচারীদের পরিচয় পত্রে মহাসচিবের স্বাক্ষর থাকবে এবং মহাসচিবের পরিচয়পত্রে কমিশনের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি অথবা জাতীয় উপদেষ্টা পরিষদের সভাপতির স্বাক্ষর থাকবে। সদর দপ্তরের পরিচয় পত্রের অনুকরণে শাখাগুলো নিজ নিজ শাখার নামে পরিচয় পত্র তৈরী করবে। জেলা, মহানগর, সুপ্রীমকোর্ট, উপজেলা/থানা এবং পৌরসভা শাখার সভাপতি এবং সাধারণ স¤পাদকদের পরিচয়পত্র কমিশনের জাতীয় সদর দপ্তর বিলি করবে এবং জাতীয় নির্বাহী কমিটির মহাসচিব কর্তৃক স্বাক্ষরিত হবে। আজীবন সদস্যদের পরিচয় পত্রে জাতীয় নির্বাহী কমিটির মহাসচিবের স্বাক্ষর থাকবে। জেলা, মহানগর, সুপ্রিমকোর্ট এবং পৌরসভা শাখার অপর কর্মকর্তা ও সদস্য/সদস্যাগণ নিজ নিজ শাখার তৈরীকৃত অনুরূপ পরিচয়পত্র বহন করবেন, যাতে নিজ নিজ শাখার সভাপতি অথবা সাধারণ স¤পাদক স্বাক্ষর করবেন। এছাড়া উপজেলা/থানা শাখার অন্যান্য কর্মকর্তা ও সদস্যগণের পরিচয়পত্রে এবং উপজেলা/থানার অধীনস্থ অন্যান্য সকল শাখার কর্মকর্তা ও সদস্যদের পরিচয়পত্রে থানা শাখার সভাপতি অথবা সাধারণ স¤পাদক স্বাক্ষর করবেন। জাতীয় নির্বাহী কমিটির সকল সদস্যগণ, জাতীয় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যগণ, সকল শাখা কমিটির কর্মকর্তা এবং কমিশনের বেতন ভোগী কর্মকর্তাগণ বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের মনোগ্রামযুক্ত ভিজিটিং কার্ড ছেপে ব্যবহার করতে পারবেন।

1 comment:

  1. আমি,বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনে কাজ করতে আগ্রহী।

    ReplyDelete